উচ্চ মাধ্যমিকে পাস ৬৮.৯১ শতাংশ




মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণে মাধ্যমিকের মত উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের পরীক্ষাতেও এবার পাসের হার কমেছে; সার্বিকভাবে পাস করেছে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী।
দ্বাদশ শ্রেণির গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পর্যায়ে পা রাখতে যাওয়া এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিপিএ- পেয়েছেন মোট ৩৭ হাজার ৭২৬ জন শিক্ষার্থী।
গত বছর পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ, জিপিএ- পেয়েছিল ৫৮ হাজার ২৭৬ জন।
সেই হিসাবে এবার উচ্চ মাধ্যমিকে পাসের হার কমেছে দশমিক ৭৯ শতাংশ পয়েন্ট। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ২০ হাজার ৫৫০ জন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ রোববার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন। সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
ফলাফল হস্তান্তরের পর পাসের হারের তথ্য প্রকাশের আগে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি গত এসএসসি পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করা হয়েছিল। তাতে পাসের হার কিছু কমেছিল। সেই পদ্ধতি এবার এইচএসসিতে প্রয়োগ করা হয়েছে।
পরে পাসের হার কমার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “খাতা সঠিক মূল্যায়ন করার ফলে এটা হয়েছে। আগে সাধারণ ধারণা ছিল ওজন করে নম্বর দেওয়া হয়। এখন সে সুযোগ আর নেই। এখন খাতা দেখেই নম্বর দিতে হয়। এটা আমরা ইতিবাচক বলেই মনে করি।
ফলাফল প্রকাশের আনুষ্ঠানিকতা সেরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কত শতাংশ পাস করেছে সেটা বড় বিষয় নয়। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে এবং এই বয়সে তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সঠিকগাইডলাইনদেওয়া।
আমি অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানান, নিজেদের ছেলেমেয়েদের প্রতি তারা যেন আরও বেশি আন্তরিক হন, ছেলেমেয়েরা নিজেদের কথাগুলো যেনে বন্ধুর মত বাবা-মাকে বলতে পারে, সেদিকে নজর দেওয়া।মাদক বা জঙ্গিবাদে তারা যেন না যায়।
বেলা ১টায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী। তারপর শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট (www.educationboardresults.gov.bd) এবং নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএস করে ফল জানতে পারবেন।
চলতি বছর এপ্রিল থেকে ১৫ মে এইচএসসির লিখিত পরীক্ষা চলে। এরপর ১৬ থেকে ২৫ মে নেওয়া হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা
আটটি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এবার মোট ১১ লাখ ৬৩ হাজার ২৭০ জন শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে পাস করেছে লাখ হাজার ৭১১ জন।
এর মধ্যে আট সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ, পূর্ণ জিপিএ পেয়েছে ৩৩ হাজার ২৪২ জন।
মাদ্রাসা বোর্ডে পাস করেছে ৭৭ দশমিক শতাংশ পরীক্ষার্থী, তাদের মধ্যে হাজার ৮১৫ জন পেয়েছে জিপিএ ৫। 
আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এবার ৮১ দশমিক ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে; হাজার ৬৬৯ জন পূর্ণ জিপিএ পেয়েছে। 
ফল জানা যাবে যেভাবে
গত কয়েক বছরের মতো এবারও কোনো শিক্ষা বোর্ড থেকে ফলাফলের হার্ডকপি সরবারহ করা হবে না।
সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার -মেইলে কেন্দ্র প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের সফট কপি সরবারহ করা হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করতে পারবে।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট ছাড়াও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের ইআইআইএন ব্যবহার করে ফলাফলের কপি ডাউনলোড করতে পারবে।
যে কোনো মোবাইল থেকে এসএসএম করেও এইচএসসি সমমানের পরীক্ষার ফল জানতে পারবেন শিক্ষার্থী অভিভাবকরা।
জন্য HSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
আলিমের ফল জানতে Alim লিখে স্পেস দিয়ে Mad স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল পাওয়া যাবে।
এছাড়া এইচএসসি ভোকেশনালের ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে Tec লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৭ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
ফল পুনঃনিরীক্ষা
রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে আগামী ২৪ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত এইচএসসি সমমানের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা যাবে।
ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে RSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
ফিরতি এসএমএসে ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর (পার্সোনাল আইযেন্টিফিকেশন নম্বর-PIN) দেয়া হবে।
আবেদনে সম্মত থাকলে RSC লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
প্রতিটি বিষয় প্রতি পত্রের জন্য দেড়শটাকা হারে চার্জ কাটা হবে।
যে সব বিষয়ের দুটি পত্র (প্রথম দ্বিতীয় পত্র) রয়েছে যে সকল বিষয়ের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করলে দুটি পত্রের জন্য মোট ৩০০ টাকা ফি কাটা হবে।
একই এসএমএসে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে, এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমেকমাদিয়ে লিখতে হবে।

Comments