দাম্পত্য। কী যেন অদ্ভুত মায়ায় জড়িয়ে থাকা একটা সম্পর্কের নাম। টক-ঝাল-মিষ্টি সম্পর্কটা আনন্দ-বেদনায় ভরা। তবে কখনো কখনো দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে শীতলতা। এ থেকে জন্ম নেয় তিক্ততা। কখনো কখনো সেটা ভাঙনে গিয়ে ঠেকে। অথচ একটু চেষ্টা করলেই আমৃত্যু দাম্পত্য সম্পর্কটাকে রাখা যায় সজীব, সতেজ আর ভালোবাসায় মুড়ানো। সুখী দাম্পত্যের কী প্রয়োজন, তা জানাচ্ছে ব্রাইট সাইড।
*জীবনের প্রতি ইতিবাচক থাকুন। কারণ, সবাই চায় তার আশপাশে উৎফুল্ল আর প্রাণবন্ত মানুষেরা থাকুক। আর সেসব মানুষের আনন্দের ঢেউ আছড়ে পরুক তার জীবনেও। তাই অসন্তুষ্টি প্রকাশ, অভিযোগ করা ও খ্যাঁচ খ্যাঁচ করা থেকে বিরত থাকুন। হাসি-খুশি আর প্রাণবন্ত থাকুন। দেখবেন, দাম্পত্য সম্পর্কে আসছে ইতিবাচক পরিবর্তন।
*জ্ঞানীরা বলেন, নিজেকে জানো। নিজেকে জানা কিন্তু নিজেকে ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ। আপনার কী করতে ভালো লাগে, সেটা করুন। হতে পারে বাগান করা, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করা কিংবা পড়াশোনা করা—যা ভালো লাগে, করুন। এতে আপনি ভালো থাকবেন, যার প্রভাব পড়বে দাম্পত্য জীবনে। কখনোই ভাববেন না, আপনি শুধু নিজের মতো থাকবেন আর আপনার সঙ্গী আপনার জন্য সব সময় ত্যাগ স্বীকার করে যাবেন। বরং, দুজনই নিজেদের পছন্দের কিছু করে উৎফুল্ল থাকুন আর দাম্পত্যকে রাঙিয়ে তুলুন।
*নিজেকে ভালোবাসার অর্থ কিন্তু এই নয় যে সঙ্গীর চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব না দেওয়া। মনে রাখবেন, স্বামী-স্ত্রী দুজন মানুষ দুটি ভিন্ন পরিবেশ থেকে ওঠে আসেন। চাওয়ায় থাকে ভিন্নতা। একজন আরেকজনের মতো হবেন—এটা কখনোই ভাবা উচিত না। দুজনের কাছেই হয়তো দুজনের কিছু জিনিস ভালো লাগে, আবার কিছু জিনিস ভালো লাগে না। সঙ্গীর চাওয়া নিয়ে পরস্পর কথা বলুন, আলোচনা করুন। দেখবেন, ঠিক একটা সমাধান বের হয়ে এসেছে।
*সঙ্গীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রাখুন। সঙ্গীর ভালো কাজের প্রশংসা করুন, খারাপটা শুধরে নিতে সহায়তা করুন। একসঙ্গে থাকতে গিয়ে ভালো-খারাপ অনেক ধরনের অভিজ্ঞতা হয় দম্পতিদের। ভালোগুলোর কথা স্মরণ করে সঙ্গীর প্রতি অকপটে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।
*দাম্পত্য জীবনে ফাটল ধরানোর জন্য তিক্ত কথা একাই যথেষ্ট। তাই শব্দচয়নে সচেতন হোন। এমন কিছু বলবেন না যা সঙ্গীকে ছোট করে, আহত করে কিংবা তার মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। আর মিথ্যা বলা উচিত না। একটা মিথ্যা ঢাকতে আরও দশটা মিথ্যা বলতে হয়। আর সত্যটা যেদিন প্রকাশ পায়, সেদিন সঙ্গীর প্রতি আস্থা আর বিশ্বাস হারিয়ে যায়। আস্থা-বিশ্বাসহীন দাম্পত্য জীবনে তখন আর টেনে নেওয়া যায় না।
*একসঙ্গে সুখের স্মৃতি তৈরি করুন। আধুনিক কর্মব্যস্ত জীবনে স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে খুব বেশি সময় কাটানো সম্ভব হয় না। যতটুকু সময় পান, সেটা ভালোভাবে কাটান। একসঙ্গে বাইরে খেতে যান, কোনো অনুষ্ঠান দেখতে যান, ঘুরতে যান কিংবা আনন্দ পান এমন কিছু করুন। এগুলোই একদিন সুখের স্মৃতি হিসেবে আপনাদের মন ভালো করে দেবে। এ ছাড়া আরও কিছু কাজ করতে পারেন; যেমন-ছবি তোলা, একসঙ্গে ঘর সাজানোর জন্য কিছু একটা কেনা। পরে সেই ছবি দেখলে ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে যেতে পারবেন অতীতের সুখের দিনে।
*জীবনটা তো মোটামুটি একটা বাধাধরা নিয়মের মধ্যে পার করতে হয়। তাই একগুঁয়েমি চলে আসতে পারে দাম্পত্য জীবনে। এ থেকে মুক্তি পেতে পরস্পরকে চমকে দিতে পারেন। সেটার জন্য খুব বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে, এমন নয়। সঙ্গী পছন্দ করে, এমন কিছু একটা উপহার দিতে পারেন। কিংবা কর্মক্ষেত্র থেকে ফেরার পথে সঙ্গীর পছন্দের খাবারটা কিনে আনতে পারেন। এতে সঙ্গীও খুশি হলো। আবার রান্নার যে সময়টুকু বাঁচল, দুজন মিলে সুন্দর কোনো ছবি দেখে, গান শুনে বা টিভিতে কোনো অনুষ্ঠান দেখে কাটিয়ে দিতে পারেন।
Comments
Post a Comment