জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৫ স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত

 রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল সোমবার হয়ে গেল ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৫’ প্রদান অনুষ্ঠান। সন্ধ্যায় পুরস্কার বিজয়ীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পদক গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে পুরস্কার গ্রহণের ফাঁকে ফাঁকে ঘটে কিছু মনে রাখার মতো ঘটনা। তেমন কিছু ঘটনাই এই প্রতিবেদনে দেওয়া হলো:


কাঁদলেন শাবানা
শুরুতেই আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত শিল্পীদের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। দেখানো হয় দুটি তথ্যচিত্র। এরপর পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে শাবানা বক্তব্য দেন। তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন চিত্রনির্মাতা ও তাঁর দীর্ঘ সময়ের সহকর্মীদের প্রতি। তিনি বলেন, ‘যাঁদের কারণে আমি শাবানা, তাঁদের আমি এই পুরস্কার উৎসর্গ করলাম। প্রবাসে থাকলেও আমার স্মৃতি ঘুরে বেড়ায় এফডিসিতে।’ শাবানা কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। শাবানার পাশাপাশি আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান। তবে অসুস্থতার কারণে তিনি পুরস্কার নিতে আসতে পারেননি। তাঁর পক্ষে শিল্পীর পুত্রবধূ গ্রহণ করেছেন আজীবন সম্মাননা পদকটি। 
 সবার আগে জাতীয় পুরস্কার
জিরো ডিগ্রি ছবির জন্য জয়া আহসান পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার। গতকাল তিনি পুরস্কার গ্রহণ করতে এসেছিলেন মাকে সঙ্গে নিয়ে। একই দিনে জয়ার একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অনুষ্ঠান আসরে অংশ নিতে দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তো আর সহজ কথা নয়। দেশের স্বীকৃতি এই অভিনেত্রীর কাছে সবচেয়ে মূল্যবান। তাই দেশের বাইরের সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে জয়া দেশেই থেকে যান। দেশের প্রতি ভালোবাসার কারণে ভিনদেশি অনুষ্ঠান বাতিল করে এ অনুষ্ঠানে আসায় প্রধানমন্ত্রীও তাঁর বক্তৃতায় জয়ার প্রশংসা করেন।
 হুমায়ূনের পুরস্কার নিলেন শাওন
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ২০১৫ সালে শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত অনিল বাগচীর একদিন ছবির জন্য প্রয়াত হুমায়ূন পেলেন এই স্বীকৃতি। গতকাল তাঁর হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করেছেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। শাওন এদিন সন্ধ্যায় তাঁর দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিতকে নিয়ে অনুষ্ঠানে হাজির হন। শাওনের সঙ্গে নিষাদ-নিনিতও তাদের বাবার হয়ে গ্রহণ করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
 রিজু কেন বারবার?
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৫-তে রিয়াজুল মওলা রিজু পরিচালিত বাপজানের বায়োস্কোপ জিতেছে সর্বোচ্চ পদক। ২১টি বিভাগের মধ্যে এই ছবি জিতেছে ৮টি পুরস্কার। তাই পুরস্কার গ্রহণের জন্য রিজু যখন বারবার মঞ্চে উঠছিলেন, তাতে রসিকতা করে নাকি প্রধানমন্ত্রী রিজুকে বলেছেন, ‘এই বাচ্চা ছেলে, তুমি একাই তো সব পুরস্কার নিয়ে গেলে!’ অনুষ্ঠান শেষে অনুভূতি জানাতে গিয়ে রিজু প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান। পুরস্কার গ্রহণের অনুভূতি জানিয়ে রিজু বলেন, ‘জীবনে প্রথমবার এত সম্মানজনক পুরস্কার নিয়েছি, তাও আবার প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে। আমার খুব নার্ভাস লাগছিল। ভয় করছিল। এত বড় একটা দিন আমার জন্য অপেক্ষা করছে, সেটা আমি কখনো ভাবিনি।’
 রাজ্জাক-শাকিবের কথোপকথন
চলচ্চিত্রপাড়ায় এক অস্থির সময় চলছে। শাকিব খানকে ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তাঁর অভিনীত ছবিগুলোতে অন্য শিল্পী ও কুশলীরা কাজ করবেন কি না, এ নিয়ে সংশয়-সংকট কদিন আগ পর্যন্তও ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে চিত্রনায়ক রাজ্জাকের সঙ্গে শাকিবের কথোপকথন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সবার নজর কাড়ে। এদিন শাকিব খান আরো ভালোবাসব তোমায় ছবির জন্য গ্রহণ করেছেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে মঞ্চ থেকে নামেন শাকিব। এরপরই তিনি দর্শকসারিতে বসা রাজ্জাকের কাছে গিয়ে পা ছুঁয়ে সালাম করেন তাঁকে। শাকিবকে রাজ্জাক বলেন, ‘কী অবস্থা, তুমি দেশে আছ? কাজকর্ম কেমন চলছে?’ জবাবে শাকিব বলেন, ‘কাজকর্ম শুরু করছি।’

Comments